ওসি প্রদীপের ফাঁসির দাবিতে আদালত চত্বরে মানববন্ধন| monaemblog.blogspot.com
সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান হত্যা মামলার আসামি কক্সবাজারের টেকনাফ থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রদীপ কুমার দাশের ফাঁসি দাবি করেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। আজ সোমবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে কক্সবাজার আদালত চত্বরে মানববন্ধনে এ দাবি জানানো হয়। টেকনাফের সর্বস্তরের জনসাধারণের উদ্যোগে এ কর্মসূচির আয়োজন করা হয়।
মানববন্ধনে অংশ নেওয়া ব্যক্তিদের অভিযোগ, প্রদীপ কুমার দাশ টেকনাফে থাকাকালে নিরীহ লোকজনকে হয়রানি ও নির্যাতন করেছেন। ক্রসফায়ার দিয়েছেন ১৪৫ জন নিরীহ মানুষকে। আজ মামলার রায় ঘোষণার দিন ধার্য করা আছে। তাঁরা চান প্রদীপ কুমার দাশের ফাঁসি হোক।
সিনহা হত্যায় মামলা চারটি
সিনহা হত্যার ঘটনায় মোট চারটি মামলা হয়েছে। ঘটনার পরপরই পুলিশ বাদী হয়ে তিনটি মামলা করে। এর মধ্যে দুটি মামলা হয় টেকনাফ থানায়, একটি রামু থানায়। তিনটি মামলার দুটি মাদক রাখার অভিযোগে এবং একটি পুলিশের ওপর হামলার অভিযোগে।
এ ঘটনায় হত্যা মামলাটি করেন সিনহার বোন শারমিন শাহরিয়া ফেরদৌস। ওই বছরের ৫ আগস্ট আদালতে করা ওই মামলায় তিনি টেকনাফ থানার সাবেক ওসি প্রদীপ কুমার দাশ, বাহারছড়া তদন্তকেন্দ্রের পরিদর্শক লিয়াকত আলীসহ পুলিশের নয় সদস্যকে আসামি করেন।
গত বছরের ২৭ জুন প্রদীপসহ ১৫ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে এই মামলার বিচার শুরু হয়।
অভিযোগপত্রে থাকা ৮৩ সাক্ষীর মধ্যে ৬৫ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করেন আদালত। গত ১২ জানুয়ারি যুক্তিতর্ক শুনানি শেষে আদালত রায় ঘোষণার দিন ধার্য করেন।
মানববন্ধনে ব্যানার নিয়ে প্রদীপের ফাঁসি দাবি করে উপস্থিত ছিলেন কক্সবাজারের স্থানীয় সাংবাদিক ফরিদুল মোস্তফা খানের মা হালিমা খাতুন। তিনি আদালত চত্বরে প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমার ছেলেকে ওসি প্রদীপ ছয়টি মিথ্যা মামলা দিয়েছে। আরও অনেক নিরীহ লোককে হয়রানি নির্যাতন করেছে।’
আজ কক্সবাজার জেলা দায়রা জজ আদালতে সিনহা হত্যা মামলার রায় ঘোষণার দিন ধার্য রয়েছে। রায় ঘোষণাকে কেন্দ্র করে সকাল থেকে আদালত চত্বরে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়।
সকাল নয়টার দিকে আদালত আসেন কক্সবাজার জেলা দায়রা জজ আদালতের সরকারি কৌঁসুলি ফরিদুল আলম। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, রায় বেলা ২টার দিকে ঘোষণা হতে পারে।
সকালে আদালতে হাজির হন সাবেক ওসি প্রদীপের আইনজীবী সমীর দাস গুপ্ত। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘ওসি প্রদীপ খুনের নির্দেশ দিয়েছেন কিংবা পরিকল্পনা করেছেন, তার কোনো প্রমাণ রাষ্ট্রপক্ষ আদালতে উপস্থাপন করতে পারেনি। তাই আমরা আশা করি, আদালত ওসি প্রদীপ বেকসুর খালাস দেবেন।’
২০২০ সালের ৩১ জুলাই রাত সাড়ে নয়টায় কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়কের শামলাপুর তল্লাশিচৌকিতে পুলিশের বাহারছড়া তদন্তকেন্দ্রের তৎকালীন কর্মকর্তা পরিদর্শক লিয়াকত আলীর গুলিতে নিহত হন সিনহা মো. রাশেদ খান। তাঁর সঙ্গে থাকা সাহেদুল ইসলামকে (সিফাত) পুলিশ গ্রেপ্তার করে। এরপর সিনহা যেখানে ছিলেন, সেই নীলিমা রিসোর্টে ঢুকে তাঁর ভিডিও দলের দুই সদস্য শিপ্রা দেবনাথ ও তাহসিন রিফাত নুরকে আটক করে। পরে তাহসিনকে ছেড়ে দিলেও শিপ্রা ও সিফাতকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠায় পুলিশ। এই দুজন পরে জামিনে মুক্তি পান।
কোন মন্তব্য নেই