বাংলাদেশে তৈরি হচ্ছে স্যামসাং স্মার্টফোন? | Galaxy A51 নাকি ২০২০ মিড রেঞ্জ সেগমেন্টে সেরা স্মার্টফোন? | সব প্রশ্নের উত্তর এখানে!
আচ্ছা স্যামসাং বাংলাদেশের জন্য এসব কি শুরু করলো? কি ?কেন? কবে? কখন? কোথায়? কিভাবে? স্যামসাং বাংলাদেশে তাদের প্রোডাক্ট তৈরি করা শুরু করল রে পাগলা,
অলরেডি দুইটা ফ্লাগশিপ মোবাইল মেড ইন বাংলাদেশ ট্যাগ দিয়ে বাংলাদেশে এনে ফেলেছে তারা, আহ কি শান্তি কবে যে সব কোম্পানির মোবাইলের পিছনে মেড ইন বাংলাদেশ লেখাটা দেখতে পাবো।
শুধু স্মার্ট ফোন কেন আমরা ধীরে ধীরে সব কিছুতেই মেড ইন বাংলাদেশ লেখা দেখতে চাই শুধু প্রযুক্তি নয় আমরা স্বয়ংসম্পূর্ণ হতে চাই সবকিছুতেই আশাকরি আপনারাও আমার সঙ্গে একমত রয়েছেন?
আচ্ছা চলুন একটা জরিপ করে ফেলি আজকে আপনারা যারা এই পোস্টটি দেখছেন, তারা কে কে বাংলাদেশে প্রত্যেকটি গেজেট এর পিছনে মেডিন বাংলাদেশ লেখা দেখতে চান তারা প্রত্যেকেই একটি করে লাইক দিয়ে যাবেন।
দেখি ফলাফল কি হয়।
দেখি ফলাফল কি হয়।
দেশের এক নম্বর ব্র্যান্ড স্যামসাং সারা বিশ্বের এর মতো বাংলাদেশেও সমানভাবে জনপ্রিয়, আর রিসেন্টলি তারাম মিরাজের বেশকিছু স্মার্টফোন মার্কেটে নিয়ে এসে রীতিমতো তাক লাগিয়ে দিয়েছে, তার মধ্যে অন্যতম স্যামসাং গ্যালাক্সি A50 আর Galaxy A51 হচ্ছে এর ই একটি আপডেটেড ভার্সন।
প্রথমে কথা বলব বিল্ড কোয়ালিটি নিয়ে বিল কোয়ালিটি নিয়ে নতুন করে বলার কিছু নেই ,সলিড বিল্ড এবং ডেফিনিটলি প্রিমিয়াম ফিল প্লাস্টিক প্যাকেট পাশাপাশি এতে রয়েছে প্লাস্টিক ফেম তবে মেটাল ফিনিশ হয় আমার কাছে তেমন একটা চিপ মনে হয়নি।
ফোনটি পাওয়া যাবে সাদা কালো এবং পিন কালারে।
বেশ বড়োসড়ো ডিসপ্লে হলেও ফোনটা বেশ হালকা-পাতলা ওজন মাত্র ১৭০ গ্রাম এর মত, আর এতে ব্যবহার করা হয়েছে সুপার এমোলেড ডিসপ্লে, ডিসপ্লে সঙ্গে পাল্লা দিয়ে স্যামসাংয়ের সাথে কেউ পারবেনা আমরা সবাই জানি সেটা, সুতরাং এই ডিসপ্লে নিয়ে বেশি কথা না বলাই ভালো।
এককথায় সলিড উইনার পুরাই মাখন মামা সাড়ে ছয় ইঞ্চি ডিসপ্লে টির প্রোটেকশন হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে গরিল্লা গ্লাস ৩, যার পিপিআই ফোর হানডেড এন্ড ৫ খুব পানছি আর কালারফুল, দিনের আলোতে বেশ ভালই পারফর্ম করেছে, সেলফি ক্যামেরা ব্যবহার করা হয়েছে এর এই পাঞ্চ হোল কাটাউট এর মধ্যে যেটা আকারে বেশ ছোট।
শুরুতে আমার কাছে একটু বেখাপ্পা লাগলেও এই ছিদ্রটি ধীরে ধীরে আপনার চোখে অভ্যস্ত হয়ে যাবে আর আমার মনে হয় না ডে টুডে ইউজে এটা তেমন কোন বড় সমস্যা তৈরি করবে।
এতে প্রসেসর হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে টেন ন্যানোমিটার ৯৬১ আর প্রসেশ্বর যেটা স্নাপড্রাগণ এর সাথে তুলনা করলে স্নাপড্রাগণ ৭১২ এর মধ্যে, পাশাপাশি অক্টোবর সিপিইউ এর মধ্যে রয়েছে মালি G৭২ জিপিও।
রেম এবং ইন্টারনাল স্টোরেজে রয়েছে বেশ কয়েকটি ভেরিয়েন্ট যেটা ৪-৬৪ থেকে শুরু করে রয়েছে ৬-১২৮ পর্যন্ত। তবে ভালো ব্যাপার হচ্ছে আপনি চাইলে এই ফোনটির মধ্যে মেমোরি কার্ড এক্সপান্ড করতে পারবেন।
এতে প্রচুর ফিচারস যোগ করা হয়েছে যেগুলি ডিটেলস বলতে গেলে পোস্টটি অনেক লম্বা হয়ে যাবে যা আজকে আর লিখে শেষ করা যাবে না, তাই খুব একটা ডিটেলসে গেলাম না বাট সংক্ষেপে বলতে গেলে এটি এসময়ের অন্যতম সেরা ইউ আই, তাই এর পারফর্মেন্স জোস কোন কথা হবে না এটা নিয়ে।
তবে আমার অভিজ্ঞতায় বেশিরভাগ স্যামসাং স্মার্টফোনের ক্ষেত্রে যেটা হয়ে থাকে কিছুদিন পর আস্তে আস্তে স্লো হতে থাকে দেখা যাক এই A51 এর ক্ষেত্রে কি হয়।
র্যাম ম্যানেজমেন্ট এর ক্ষেত্রে নিজেদেরকে সেরা টা দেখিয়েছে ওয়ান ইউ আই অবশ্যই ১০-১০মার্ক নিয়ে এগিয়ে থাকবে বাজারে অন্যান্য প্রতিবন্ধীদের কাছ থেকে।
মাল্টিটাস্কিং বেশ ভালোভাবে হ্যান্ডেল করেছে এই স্মার্টফোনটি আমাদের টেস্টিং এ আমরা কোনরকম লেগ পারফরম্যান্স ইসু পাইনি , পাবজি , কল অফ ডিউটি, সহ বেশ কিছু হাই রেজুলেশনের গেম ট্রাই করছি, সব জায়গাতেই সমান দক্ষতা প্রদর্শন করেছে, গেমিং এর সময় সাইটলি হিট অফ হয়, তবে সেটা খুবই নরমালি মনে হয়েছে আমার কাছে।
আপনি ঘন্টার পর ঘন্টা গেম খেলবেন আর ফোন একটু গরম হবে না…………. সেটা তো হতে পারে না?
আগের ভার্সন এর মতে এটাতেও ব্যবহার করা হয়েছে ইন ডিসপ্লে ফিঙ্গারপ্রিন্ট সেন্সর আর এর পারফরম্যান্স নিয়ে একটু পরে কথা বলছি সো অপেক্ষা করুন।
একে পাওয়ার আপ করার জন্য ব্যবহার করা হয়েছে ৪০০০ এম্পিয়ার ব্যাটারী, আপনি যদি নরমাল ইউজার হন তাহলে সারাদিন কেটে যাবে নো ইসু বাট আপনি যদি হেভি ইউজার হন তাহলে বিশেষ করে আপনি যদি গেম খেলতে পছন্দ করেন গেমার হন তাহলে????? দিন শেষে একটু টানাটানি পড়ে যাবে।
বক্সে পেয়ে যাবেন ১৫ ওয়াটের চার্জার যেটা নিয়ে একটু পরেই কথা বলছি তার আগে বলে নিই ফুল চার্জ হতে সময় নেবে ১ ঘন্টা ৫০ মিনিটের মত।
এবার চলে আসলাম ক্যামেরা সেকশনে স্যামসাং ফোন গুলো ক্যামেরার ক্ষেত্রে খুবই ভালো সব সময় আপনারা
সবাই সেটা ভালো করেই জানেন? আর গ্যালাক্সি এ ফিফটি ওয়ান ও তার ব্যতিক্রম নয়,
এর পিছনে ব্যবহার করা হয়েছে কোয়ার্ট ক্যামেরা সেটআপ মেইন ক্যামেরা হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে ৪৮ মেগাপিক্সেলের সেন্সর সাথে ১২ মেগাপিক্সেল এর ওয়াইড এঙ্গেল সেন্সর ৫ মেগা পিক্সেলের ম্যাক্রো সেনসর এর পাশাপাশি আরও থাকছে ৫ মেগাপিক্সেলের ডিপ সেন্সর।
ছবির শার্পনেস উল্লেখ করার মতো সুন্দর কালার গুলো একেবারে ন্যাচরাল ও নয় আবার খুব কালারফুল ও নয় মাঝামাঝি একটা কিছু, লো লাইটে যদিও ছবিগুলো একটু ওয়ার্কআউট হয়ে যাচ্ছিল কিন্তু ভালো ব্যাপার হল এর ডায়নামিক রেশিও একেবারে ফ্ল্যাগশিপ দের মত।
প্রটেক্ট মুডে যথেষ্ট ভালো মানের ছবি তুলতে সক্ষম এটি তবে মাঝে মাঝে এস ডিটেকশন করতে যেয়ে সাবজেক্ট ব্লারি হয়ে যাচ্ছিল যেটা কিনা অলমোস্ট সব ফোনেই প্রায় দেখা যায়। ডেডিকেটেড মেট্রো ক্যামেরার কল্যাণে বেশ দারুন কিছু ম্যাক্রো শট পেয়েছি আমরা, এর একটা সুবিধা হল ম্যাক্রো মুটেও ফ্লাশ ব্যবহার করা যায় আর অসুবিধা হলো আপনি ম্যানুয়ালি ফোকাস নিতে পারবেন না।
আর এর সামনে ব্যবহার করা হয়েছে 32 মেগাপিক্সেলের এর ওয়াইট সেন্সর যার অ্যাপাচার টু পয়েন্ট টু সেলফি ক্যামেরা সেলফির মান টিপিক্যাল স্যামসাং ফোনের মতই খুবই সার্ফ আর প্রাণবন্ত কোথায় কোথাও একটু খারাপ লেগেছে বাট ওভারঅল এটা নিয়ে আমি সেটিস্ফাইড।
সব মিলিয়ে আমি এই ফোনটির ক্যামেরাকে ১০-৯ দিব।
ভালো ব্যাপার হলো এতে 3.5 এমএম হেডফোন জ্যাক থাকছে শো মিউজিক লাভারদের টেনশনের কোন কারণ নাই।
আর কল কোয়ালিটি বলুন ওয়াইফাই সিগন্যাল বলুন এগুলোতে কোন রকম কোন ইস্যু খুঁজে পাই নাই আমি এই ব্যাপারেও সবাইকে নিশ্চিন্তে রাখছে স্যামসাং।
আমি সব সময় যেটা বলি পৃথিবীর কোন কিছুই আসলে পারফেক্ট নয় আর স্যামসাং গ্যালাক্সি A51 ও তার ব্যতিক্রম নয়,
তো চলুন দেখে আসি এর কিছু মন্দ দিক।
তো চলুন দেখে আসি এর কিছু মন্দ দিক।
দাম বিবেচনায় আমি আশা করেছিলাম পিছনে গ্লাস বডি ব্যবহার করা হবে সে ক্ষেত্রে দেখতে আর একটু প্রিমিয়াম লাগদো নিঃসন্দেহে, কিন্তু প্লাস্টিক বডি দেখে আমার মত আপনারা অনেকেই হতাশ হতে পারেন।
গ্যালাক্সি এ ৫০ এর অন্যতম মন্দ দিক ছিল এর ইন ডিসপ্লে ফিঙ্গারপ্রিন্ট সেন্সর খুবই স্লো এবং আশা করেছিলাম আমি এ ৫১ এ এটা ইন প্রুফ করবে তারা, কিন্তু যেই লাউ সেই কদু।
পার্সোনালি আমি ফিঙ্গারপ্রিন্ট সেন্সর এর পজিশন ক্ষেত্রে রিয়ার মাউন্টে এ বেশি কম্পিটেবল ফিল করি।
আরেকটু পাওয়ারফুল পাওয়ারফুল প্রসেসর আশা করেছিলাম আমি স্যামসাংয়ের থেকে, 20 থেকে 22 হাজার টাকা বাজেটে রিয়েলমি বা শাওমি স্মার্টফোন গুলোতে এর থেকে আরও বেশি পাওয়ারফুল প্রসেসর ব্যবহার করা হয়।
এক্ষেত্রে আমি বলব স্যামসাং গ্যালাক্সি এ৫১ কিছুটা পিছিয়ে থাকবে।
স্যামসাংয়ের সিংহাসনে হানা দেয়া আরো কিছু প্রপোলার ব্র্যান্ড রিয়েলমি এবং শাওমি তারা বেশ কম দামে আরো বেশি স্টোরেজ আর রেম অফার করছে সুতরাং সেই সব দিক বিবেচনায়ও এটাকে কিছুটা পিছিয়ে রাখতে হয়।
ওয়েল এর আরেকটা ব্যাপারে আমি একটু হতাশ বলতে পারেন সেটা হচ্ছে এর ডিসপ্লে প্রোটেকশন ২০২০ সালে এসে সেই ২০১৩ সালের প্রযুক্তি এতে ব্যবহার করা হয়েছে, অবশ্যই গরিলা গ্লাস থ্রির কথা বলছি মানে ব্যাপারটা কেমন হয়ে গেলো না???
হতাশার আরেক নাম চার্জার চার্জিং এর ক্ষেত্রে চাইনিজ অন্যান্য ব্র্যান্ড গুলো যখন রীতিমতো তাক লাগিয়ে দিচ্ছে, তখন স্যামসাং এখনো সেই পুরনো প্রযুক্তিতেই পড়ে রয়েছে, এর ১৫ ওয়াটের চার্জিং ব্যাপারটা আমাকে একটু লজ্জায় ফেলে দিয়েছিল। রিয়েলমি বা শাওমি এর প্রসঙ্গে চলে আসলে তাদের সিমিলার প্রাইস লেন্সের ফোনগুলোতেও ৩০ ওয়ার্ড পর্যন্ত ফাস্ট চার্জিং ইউজ করা হয়েছে।
আমার মনে হয় এই ব্যাপারটা স্যামসাংকে আরও গুরুত্ব দেয়া উচিত, স্যামসাং গ্যালাক্সি এ৫১ এর অফিশিয়াল প্রাইস ৩০,০০০ টাকার কাছাকাছি তবে আনঅফিসিয়ালি ভার্সন পেয়ে যাবেন মাত্র ২৬ হাজার টাকায়।
ওয়েল সবকিছু বিবেচনা করে অবশেষে আমি যেটা বুঝলাম সেটা হচ্ছে গিয়ে এর প্রাইজ যদি আরেকটু কমানো যেত তাহলে এটা অন্যতম সেরা মিড রেঞ্জ স্মার্টফোন অফ ২০২০ বলতে আমার কোন দ্বিধা ছিল না।
আর প্রাইজের প্রসঙ্গ যেহেতু আসলো তাহলে আরেকটা ব্যাপার আপনাদেরকে মনে করিয়ে দিতে চাই সেটি হচ্ছে আমাদের দেশে স্মার্টফোন আমদানির ক্ষেত্রে কোম্পানিগুলোকে ফিফটি 7% টেক্সট পরিশোধ করতে হয় সুতরাং সবমিলিয়ে দাম তো বাড়বেই।
তবে আশা করছি অর্ধ ভবিষ্যতে স্যামসাং তাদের সমস্ত মডেলগুলো বাংলাদেশে প্রোডাকশন করবে এবং যার ফলে দাম অনেক কমে যাবে এবং আমাদের হাতের নাগালেই থাকবে ওয়েট এন্ড সি।
কোন মন্তব্য নেই